Skip to content
মুজিব হাসান
Menu
  • মুখপাতা
  • চিন্তানুড়ি
  • গদ্যলেখা
  • স্মৃতিকথা
  • জীবনপাঠ
  • গল্পগুচ্ছ
  • ধারাবাহিক
    • উপন্যাস
    • ভ্রমণগদ্য
  • আলাপঘর
    • মুখোমুখি
    • মুখাড্ডা
  • দেরাজ
    • পাণ্ডুলিপি
    • পাঠানুভূতি
    • চিঠিপত্র
  • খোলা বই
  • বিশেষ আয়োজন
Menu

ঢাকাবাসের এক বছর

পোস্ট করা হয়েছে জুন ২০, ২০২৪জুলাই ৮, ২০২৪ by মুজিব হাসান

আমার ঢাকাবাসের এক বছর পূরণ হলো আজ। সেইসাথে সমকালীন প্রকাশনের সাথে পথচলার এক বছর পূর্তি হলো। গত বছরের এই দিনে সমকালীনে সম্পাদনার কাজে যোগদান করেছিলাম। এ কাজে আমার সেতুবন্ধন হয়েছে জাবির মাহমুদ। বাইশের একুশে বইমেলায় এক মুখাড্ডার সাক্ষাৎ থেকে শুরু হয়েছিল আমাদের হৃদ্যতা, সেটা এখনো অটুট। আর আমার ঢাকায় আসা এবং প্রকাশনার কাজে যুক্ত হওয়ার ব্যাপারে বেশি উচ্ছ্বসিত ছিল বন্ধু মাসরুর ও নূর। বলা যায়, অনেকটা তাদের আশ্বাসে আমি মফস্বল ছেড়ে মহানগরীতে থিতু হতে সাহস করেছিলাম।

গত বছর কিশোরগঞ্জ ছেড়েছিলাম ৩১শে ডিসেম্বর বিকেলে। ঢাকায় পৌঁছতে পৌঁছতে রাত নয়টা বেজে গিয়েছিল। যাত্রাবাড়ি কুতুবখালি এসে নেমেছিলাম। থাকার জায়গা ঠিক হয়েছিল জাবিরদের বাসায়। তখন আমাকে এগিয়ে নিতে এসেছিল সাদিক মানসুর। সেটা ছিল আমাদের প্রথম দেখা। যে কদিন একসাথে থেকেছি, তাকে খুবই আন্তরিক পেয়েছি। সেই বাসায় আরও ছিল যুবায়ের ভাই ও ইমরান ভাই। তাদের দুজনকেও পেয়েছি অত্যন্ত আন্তরিক, উদারমনা ও মিশুক হিসেবে। বিপদ-আপদে পাশে থেকেছেন, সহায়তা করেছেন আমাকে।

ধোলাইপাড় ডিপটি গলির ওই বাসায় ছিলাম ছয় মাস। জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত। বাসাটা খুব পছন্দের ছিল। বিশেষত ব্যালকনিটা ছিল দারুণ। সেখান থেকে ভোর বিহান, শেষ বিকেল ও নিশুতির প্রহরগুলোকে ভারি সুন্দর ও নান্দনিক সাজে উপভোগ করা যেত। আমি আর জাবির সেখানে এক টুকরো বাগান করেছিলাম। তিনটি গাছ ছিল : তুলসি, পুদিনা আর বেলি। তুলসি আর বেলিটি ছিল টবে; পুদিনাটি কাগুজে ঠোঙায়। বেলি গাছটিতে রাতে ফুল ফোটত আর মনমাতানো সুবাস ছড়াত। তুলসি গাছটি বড় হতে হতে ঝুরা হয়ে গিয়েছিল। সবচেয়ে উপকৃত হয়েছি পুদিনা গাছটি থেকে। লেবুর শরবত ও লিকার চা পান করতাম এর পাতা দিয়ে। সেই গাছ তিনটি এখন আর নেই। কুরবানি ঈদের ছুটিতে বাড়ি থেকে ফেরার পর দেখি, সব শুকিয়ে কাঠ হয়ে গেছে!

তখন সমকালীনের অফিস ছিল পুরানা পল্টনে। বাইশের জুলাইয়ে সেই অফিসে প্রথম গিয়েছিলাম রাজু ভাইয়ের ডাকে। আমাকে স্বাগত জানিয়েছিল জাবির। রাজু ভাইয়ের সাথে সেবারই প্রথম দেখা। সৌজন্য সাক্ষাতে তাকে হাসিমুখ, সদালাপী, আন্তরিক মানুষ হিসেবে পেয়েছি। তাই প্রথম দেখায় ভাইয়াকে বড় আপন মনে হয়ে গিয়েছিল। তিনি বলেছিলেন তখনই কাজে যোগদান করতে। কিন্তু তখনো আমি শাহ সাহেব হুজুরের স্মারকের কাজে নিরত। তাই এটা শেষ করে সমকালীনের সাথে যুক্ত হওয়ার ব্যাপারে আশ্বাস দিয়েছিলাম। আর সেটার বাস্তবায়ন ঘটল তেইশের ১লা জানুয়ারিতে।

প্রথম দিন অফিসে যাব। ধোলাইপাড় মোড়ে গেলাম জাবিরের সাথে। নগর পরিবহনে চড়ে গুলিস্তান নামলাম। সেখান থেকে হেঁটে বায়তুল মোকাররম আর পল্টনের গলিপথ পেরিয়ে পৌঁছলাম জামান টাওয়ার। এর তৃতীয় তলায় অফিস। যেহেতু আগে একবার এসেছিলাম, তাই ওই ঠাউরে চলে এলাম অফিসের দরজায়। তখন দরজা থেকে আমাকে স্বাগত জানাল পারভেজ ভাই। ভেতরে ঢুকলে শুরু হলো পরিচয়পর্ব। প্রথমেই আমার দিকে হৃদ্যতার হাত বাড়িয়ে দিল ওমর ভাই। এরপর একে একে সারোয়ার ভাই, ফুয়াদ ভাই, মাহবুব ভাই, যাহিদ ভাই ও হাসানাত ভাইয়ের সাথে পরিচিত হলাম। কাস্টমার কেয়ারের শাওন ভাই, সালেহ ভাই ও ইকবাল ভাই আর ইলাস্ট্রেশন ডিজাইনের ইফতিখার ভাই ও রেদওয়ান ভাইয়ের সাথেও পরিচিত হলাম। বেলা এগারোটায় এলেন রাজু ভাই। ভাইয়ার সাথে করলাম সৌজন্য সাক্ষাৎ।

প্রথম দিনের অফিসে সবার আচার-ব্যবহারে যে কোমলতা ও আন্তরিকতা পেয়েছিলাম, এটা আমাকে খুবই আপ্লুত ও উদ্দীপ্ত করেছিল। তাই ওইদিনই সবার সাথে একটা ঘনিষ্ঠতা তৈরি হয়ে গেল। এ সূত্রে সারোয়ার ভাই আমাকে একটি বিষয়ে পরামর্শ দিল। যাহিদ ভাই আমাকে দিল একগাদা বই—কাজের ফাঁকে সময়টাকে পাঠবিমোহিত রাখার জন্য। মাহবুব ভাই অফিস শেষে ধরিয়ে দিল ১ হাজার টাকা—আমি বাংলাবাজার যাব; তার জন্য কিছু বই আনতে হবে। আর দুপুরের খাবার সময় শাওন ভাই ও সালেহ ভাইয়ের সাথে বাইরে গেলাম। শাওন বিরিয়ানি রেস্টুরেন্টে গিয়ে খেলাম ডিমখিচুরি। তখন এই শাওন নাম হওয়ার একে ভেবে বসেছিলাম, এটি বোধহয় শাওন ভাইয়ের রেস্টুরেন্ট!

প্রথম দিনই এসে আমাকে জোহর ও আসর ওয়াক্তের নামাজ পড়াতে হয়েছিল। আসরের পর করতে হয়েছিল বয়ান। মানুষের সামনে কথা বলায় আমার অভ্যস্ততা কম। তবুও সেদিন দু-এক মিনিট একটি হাদিসের ওপর কথা বলেছিলাম। দেখলাম সবাই খুব আগ্রহ নিয়ে শুনছেন আমার কথাগুলো। সবার চোখেমুখে একটা সমীহভাবও লক্ষ করলাম। এরপর দ্বিতীয় দিন পরিচিত হলাম নিলয় ভাই আর আহমেদ ইয়াসিন ভাইয়ের সাথে। মেরুল বাড্ডায় ইয়াসিন ভাইয়ের ছেলের আকিকা অনুষ্ঠান ছিল। সেখানে দাওয়াত ছিল সবার। শাওন আর আবু সালেহের সাথে আমিও গেলাম। আমাকে দেখেই ইয়াসিন ভাই হাসিমুখে বুকে জড়িয়ে নিলেন। তখন ভাইয়াকেও খুব আপন মনে হয়ে গেল। এইদিন মাহিরও কাজে যোগদান করল। তার সাথেও পরিচিত হলাম। তার দিন পনেরো পরে এলেন রাকিব ভাই, আনাস ভাই, আমান ভাই আর সাইফুল ভাই। তাদের সাথে চেনাজানা ও হৃদ্যতা হয়ে গেল অল্প সময়ে।

প্রথম দিন অফিস করেই চলে গিয়েছিলাম বাংলাবাজার, মাসরুরের কাছে। রাতে ওর সাথে ফরিদাবাদ গেলাম বুদ্দুর তেহারি খেতে। দারুণ খাওয়াদাওয়া আর বুড়িগঙ্গার পারে উলামা পার্কে ঘুরাঘুরি হলো। সেদিন আর বাসায় যাওয়া হয়নি, দ্বিতীয় দিনও না, তৃতীয় দিনও না। গেলাম একেবারে চতুর্থ দিন। তা দেখে জাবির মজা করে বলল, ঢাকা শহরে আপনার যা বন্ধুমহল, দেখছি এক মাস বাসায় না এসে তাদের কাছেই থাকতে পারবেন! শুনে আমি হাসিমুখে মাথা নাড়লাম। মূলত রাস্তাঘাট আর বাসটাস চেনা নিয়ে প্রথম দিকে একটু অসুবিধায় পড়তে হয়েছিল। এ কারণে কোথাও বের হলে ঠিক সময়ে বাসায় পৌঁছতে পারতাম না। এতে করে সহজ পথে চলে যেতাম বাংলাবাজার, মাসরুরের কাছে। তাই প্রথম দিকে খুব ঘনঘন ওর কাছে গিয়েছি। পরে অবশ্য সব চেনাজানা হয়ে গেছে। ততদিনে আবিষ্কারও করে ফেলেছি অনেক জায়গার সংক্ষিপ্ত পথ।

তারপর মাস ছয়েকের ব্যবধানে আমার আবাস আর অফিসের স্থানও পরিবর্তন হয়েছে। নতুন রুমমেট হিসেবে পেয়েছি নুরুদ্দিন তসলিমকে। খুবই ভালো মনের মানুষ সে। এখন তার সাথেই সুখেদুখে মিলিয়ে থাকছি দক্ষিণ বনশ্রীর একটি বাসায়। এই বাসার ছাটটা দারুণ; বাড়ির উঠানের মতো বিশাল। আমাদের ইচ্ছে, এখানে একটা বাগান করব। এর মধ্যে নুরুদ্দিন উদ্যোগ নিয়ে বিশটির বেশি গাছ লাগিয়েছে ছোটবড় বিভিন্ন টবে। সকালঘুমের পর বাইরে বেরোলেই চোখে পড়ে গাছগুলো। তখন কী যে দারুণ লাগে দেখতে! বিশেষ করে শাওনের দেওয়া নীল অপরাজিতা গাছটির দিকে তাকালে আমার চোখ জুড়িয়ে যায়, মনও ভরে যায়। পুরো দিনটাকে রঙিন মনে হয়।

তেইশে আমার দুটো স্বপ্ন পূরণ হয়েছে এবং জমা হয়েছে কিছু প্রাপ্তি। স্বপ্নদুটো হলো, আমার একটি গদ্যের বই বেরিয়েছে ফেব্রুয়ারির একুশে বইমেলায়। বইটি নিয়ে শুরুতে খুব উচ্ছ্বাস অনুভব করেছি। তবে কিছু বেদনাদায়ক কারণে সেই উচ্ছ্বাসে এখন অনেকটা ভাটা পড়ে গেছে। মার্চে সমকালীনের সাথে অফিসিয়াল ট্যুরে গিয়েছি কক্সবাজার সমুদ্রবিলাসে। সোনাদিয়া দ্বীপে আধা আধা দুটো দিনে বাঁধা একটি রাত পার করেছি। সেই রাতটি ছিল খুবই চমৎকার, স্মৃতিময় ও আনন্দঘন। সাথে পুরো সমুদ্রসৈকতে মেরিন ড্রাইভ করেছি। আর প্রাপ্তিগুলো হলো, হাওড় নিয়ে খসড়ার মতো করে একটি উপন্যাস লিখতে পেরেছি। আল মাহমুদ সমগ্রটা কেনা হয়েছে। আরও কিছু পছন্দের বইও কেনা হয়েছে। এগুলো দিয়ে গড়ে তুলেছি আমার একটি ছোট্ট বইঘর।

তেইশ সাল গত হলো, চব্বিশ সাল এলো। জীবনের পেখমে যুক্ত হলো একটি নতুন পালক। এই পালক দিয়ে এখন বুনতে হবে স্বপ্নের জাল। সবাইকে বলে রাখছি : আমার সেই স্বপ্নটির নাম—চব্বিশের চার!

মন্তব্য করুন

আরও লেখা :

  • যখন মাসের শেষ

    যখন মাসের শেষ

    মাসের বিশ তারিখের পর...
  • গুলিস্তানের পথমুখ

    গুলিস্তানের পথমুখ

    রামপুরা থেকে কদমতলি ...
  • আফালের দিনে

    আফালের দিনে

    রৌদ্রোজ্জ্বল দিনের ন...
  • বন্ধুতার অমৃতে

    বন্ধুতার অমৃতে

    বন্দের নাম চন্দনা। উ...
শেয়ার করুন
Amar Kotha

আমি মুজিব হাসান। আমার জন্ম কিশোরগঞ্জ জেলার হাওড় এলাকার এক কৃষক পরিবারে। দিনটি ছিল ১৩ বোশেখ—নতুন ফসল ঘরে তোলার আমেজময় সময়। বাপদাদার পেশা হাওড়ের চাষাবাদ আর গাঙের জলমহাল। আমার ইচ্ছা লেখালেখিকে নিজের পেশা হিসেবে বরণ করে নেব। এ দেশে কলমকারি করে জীবিকা নির্বাহ করা যদিও বেশ কঠিন কাজ, তবুও এ ইচ্ছা জিইয়ে রাখব।

পড়াশোনার পুরোটা কওমি মাদরাসায়। জামিয়া ইমদাদিয়া কিশোরগঞ্জ থেকে দাওরায়ে হাদিস, এরপর জামেয়া দারুল মাআরিফ চট্টগ্রামে আরবি সাহিত্য পড়েছি। করোনা মহামারির সময়টায় শুরু করেছি কর্মজীবন। প্রকাশনায় কাজের ইচ্ছা থেকে বর্তমানে সম্পাদনার কাজবাজ করছি। এছাড়া নিজের পায়ে দাঁড়ানোর মতো এখনো কোনো পাটাতন তৈরি করতে পারিনি।

হাওড়ের জীবন, প্রকৃতি ও মানুষ দেখে জেগেছে আমার লেখালেখির বোধ। জীবনের প্রথম রচনা একটি খুদেগল্প—লিখেছিলাম মক্তব সুওমে পড়ার সময়। মক্তব পাঞ্জম থেকে শুরু নিয়মিত লেখালেখি। ডায়েরি আর ছড়া-কবিতা ছিল আমার নিত্য কলমকারি। হেদায়াতুন্নাহু জামাতে পড়ার সময় গল্প-উপন্যাস রচনায় হাত দিই। এক খাতায় এক বসাতে লিখতাম আস্ত উপন্যাস!

স্কুল-মাদরাসার পাঠ্যবইগুলো আমার সাহিত্য পাঠের প্রথম জোগান। শহুরে পরিবেশে এসে বই পড়ার দিগন্ত আরও প্রসারিত হলো। মাদরাসার সাহিত্য পাঠাগার, পাবলিক লাইব্রেরি, বইয়ের দোকানে ছিল নিত্য যাতায়াত। গল্প-উপন্যাস পড়তে বেশি ভালো লাগে। কবিতা আমার অবসরের সঙ্গী। কুরআনের তাফসির ও জীবনী সাহিত্য বেশ টানে। খুব রয়েসয়ে পাঠ করি চিন্তামূলক রচনাগুলো।

পৃথিবীর বুকে আমি একটি নুক্তা কিংবা নুড়ি। বয়স ও সময়ের ঘর্ষণে ক্ষয়ে যাচ্ছি ধীরে ধীরে। চিহ্নপত্রে নিজেকে নিয়ে বলার মতো এটুকুই কথা। বাকি সব বকওয়াজ।

ফেসবুকে আমি

এটা আমার ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট।
অনুমতি ছাড়া এখান থেকে কোনো লেখা বা ছবি কপি করা অন্যায়ের অন্তর্ভুক্ত।

<
.

নিয়মিত আপডেট পেতে সাবস্ক্রাইব করুন

© ২০২৫ মুজিব হাসান