Skip to content
মুজিব হাসান
Menu
  • মুখপাতা
  • চিন্তানুড়ি
  • গদ্যলেখা
  • স্মৃতিকথা
  • জীবনপাঠ
  • গল্পগুচ্ছ
  • ধারাবাহিক
    • উপন্যাস
    • ভ্রমণগদ্য
  • আলাপঘর
    • মুখোমুখি
    • মুখাড্ডা
  • দেরাজ
    • পাণ্ডুলিপি
    • পাঠানুভূতি
    • চিঠিপত্র
  • খোলা বই
  • বিশেষ আয়োজন
Menu

মাওলানা আতহার আলী রহ.-এর সাহিত্য-মনন
তিনটি দেয়াল-কবিতা

পোস্ট করা হয়েছে জুন ২০, ২০২৪জুলাই ৮, ২০২৪ by মুজিব হাসান

মুজাহিদে মিল্লাত মাওলানা আতহার আলী রহ. ছিলেন একজন মননশীল হৃদয়ের অধিকারী এবং অসাধারণ সাহিত্যপ্রেমী ব্যক্তিত্ব। ইসলামি সাহিত্য ও সাংবাদিকতার পৃষ্ঠপোষকতার পাশাপাশি তিনি নিজের ভেতরেও লালন করতেন এক অনন্য সাহিত্য-মনন। সেই মননশীলতার ছাপ আজও প্রোজ্জ্বল হয়ে আছে তার প্রতিষ্ঠিত বিদ্যাপীঠ জামিয়া ইমদাদিয়ার দেয়ালে।

১৯৫২ সালে যখন রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবিতে গোটা দেশজুড়ে আন্দোলনের জোয়ার উঠেছিল, সেসময় মাওলানা আতহার আলী রহ.-এর অবস্থান ছিল রাষ্ট্রভাষা বাংলা হওয়ার সপক্ষে। এর জন্য তিনি ব্যক্তিগতভাবে যেরকম উদ্যোগ ও প্রচেষ্টা গ্রহণ করেছেন, তেমনই দলীয়ভাবেও অনেক কর্মসূচি আঞ্জাম দিয়েছেন। তার ব্যক্তিগত উদ্যোগের একটি চমৎকার নমুনা আজও মূর্ত হয়ে আছে জামিয়া ইমদাদিয়ার দক্ষিণ ভবনের তিনতলার রেলিংয়ে।

তখন জামিয়া ইমদাদিয়ার বাংলা বিভাগের শিক্ষক ছিলেন কাজী শামসুদ্দীন আহমদ রহ.। সেই বিক্ষুব্ধ সময়ে জামিয়া ইমদাদিয়ার শানে তিনি একটি কবিতা রচনা করেছিলেন বাংলাভাষায়। শায়খুল জামিয়া রহ.-এর কবিতাটি এতই পছন্দ হয়েছিল—সেটিকে তিনি নান্দনিক শিল্পকর্মের মাধ্যমে বরণীয় করে রেখে দিয়েছেন। জামিয়ার পাঁচতলাবিশিষ্ট দক্ষিণ ভবন নির্মাণকালে কবিতাটি তিনি প্রতিস্থাপন করে দিয়েছেন তিনতলার রেলিংয়ে—সিমেন্টের পাকা অক্ষরে। তার সাহিত্য-মননের নিদর্শন হিসেবে কবিতাটি আজও অক্ষত আছে যথাস্থানে। কবিতাটি হলো—

নীতি শিক্ষার এইযে কেন্দ্র ইলমে দীনের এইযে খনি,

হাদিস-ফিকার আলোচনা খোদার নামের অমর ধ্বনি।

জ্ঞান-গরিমার আলোকরশ্মি গবেষণার জ্যোৎস্না-দ্যুতি,

প্রতি কণ্ঠের মারহাবা রব দ্বার প্রাচীরে মূর্ত অতি।

কিশোরগঞ্জের এই জামিয়া বাক শিখানোর এক মোজেজা,

আঁধারে কেউ মশাল জ্বালি দেখায় যথা পথটি সোজা।

কভু জাগায় প্রাণের স্পন্দন কভু ফোটায় দিলের কলি,

মহাশূন্যে গুঞ্জরিত ছিল যখন একটি বুলি।

উত্তরাধিকার স্বরূপে স্বত্ব যে জ্ঞান আম্বিয়াদের,

সে জ্ঞান শুধু মিলবে যাতে রেজামন্দি আল্লাপাকের।

দুই.

তখনকার জামিয়া ইমদাদিয়ায় অনেক অভিজ্ঞ ও পণ্ডিত শিক্ষকের মিলনমেলা ছিল। মাওলানা সাইয়িদ আবদুল আহাদ কাসেমি রহ. ছিলেন তাদেরই একজন। সুলেখক ও সুসাহিত্যিক হিসেবে তার খুব খ্যাতি ছিল। আরবি ও উর্দুভাষায় তিনি সাহিত্যচর্চা করতেন। সেই প্রেক্ষাপটে জামিয়া ইমদাদিয়ার শানে আরবিভাষায় একটি কবিতা রচনা করেছিলেন তিনি। তার রচিত কবিতাটিও শায়খুল জামিয়া রহ.-এর খুব পছন্দ হয়েছিল। এই কবিতাটিও তিনি বরণীয় করে রেখে দিয়েছেন জামিয়া ইমদাদিয়ার দেয়ালে।

আরবিভাষায় এরকম আরও একটি কবিতা রচনা করেছিলেন এসময়কার বাংলাদেশের আরবি সাহিত্যের রূপকার মাওলানা সুলতান যওক নদভি হাফিজাহুল্লাহ। সেসময় তিনিও ছিলেন জামিয়া ইমদাদিয়ার শিক্ষক। শায়খুল জামিয়া রহ. তার এই কবিতাখানি পড়ে অনেক সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন এবং কবিতাটি নিয়ে দেখিয়েছিলেন সেসময়কার ইসলামি উলুমের একজন অভিজ্ঞ জ্ঞানবৃদ্ধ মাওলানা আবদুর রহমান কাশগরি রহ.-কে। তিনিও কবিতাটি পাঠ করে খুবই প্রীত হন।

সাইয়িদ কাসেমি রহ.-এর রচিত কবিতাটি জামিয়ার দক্ষিণ ভবনের নিচতলার রেলিংয়ে একটি ফলকে মূর্ত হয়ে আছে। কবিতাটি হলো—

جامعة أسس بنيانها ۞ أطهرها المنفق ممامعه

 جامعة عالية حصنها ۞ حصن تقي رأيته لامعة

قلت وأزخت بوجه الإله ۞ مدرسة شامخة جامعة

তিন.

শায়খুল জামিয়া মাওলানা আতহার আলী রহ.-এর সাহিত্য-মনন এবং কবিতাপ্রেমের আরও একটি নমুনা মূর্ত হয়ে আছে জামিয়া ইমদাদিয়ার দেয়ালে। এই কবিতাটি ফারসি ভাষায় রচিত, সেসময়কার প্রেক্ষাপটে। কিন্তু এর রচয়িতার ব্যাপারে কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি। জামিয়া ইমদাদিয়ার ইতিহাস-ঐতিহ্যের অংশবিশেষ এই কবিতাটি ২ নং প্রবেশপথের উপরিভাগে একটি ফলকে লেখা আছে। কবিতাটি হলো—

قطعہ تاریخ

تاسیس جامیعہ امدادیہ کشورغنج

دست امداد حضرت اطہر ۞  چیدہ از شاخ سدرہ تازہ ثمر

فکر تجدید علم دین دردل ۞  شوق تاسیس جامیعہ امدادیہ درسر

بنہادہ است سنگ بنیادش ۞ بنشاندہ است نخل  بارآور

رفعتش بیں کشیدہ سر ۞ ایں بفلک  مقدس و اطہر

سال سنگ بنا بگفت حفیظ ۞ جلؤہ اوج علم و فضل و سہز

শায়খুল জামিয়া মাওলানা আতহার আলী রহ.-এর সাহিত্য-মননের উজ্জ্বল সাক্ষর বহন করে চলেছে এই তিনটি দেয়াল-কবিতা। সাহিত্যচর্চা তার ক্ষেত্র না হলেও ইসলামি মূল্যবোধ জাগরণী সাহিত্যকে তিনি আজীবন ভালোবেসে গেছেন। তার এই ভালোবাসাই আমাদের আদর্শ।

মৌখিক তথ্যদান

মাওলানা আবদুল হক জালালাবাদী, আল্লামা সুলতান যওক নদভী, মাওলানা শফিকুর রহমান জালালাবাদী, জনাব আবুল কালাম মাহবুব

মন্তব্য করুন

আরও লেখা :

  • একদিন মুজাকারায়, মহি...

    একদিন মুজাকারায়, মহি...

    মিষ্টি রোদের বনের ওপ...
  • গুচ্ছ গুচ্ছ স্মৃতির ...

    গুচ্ছ গুচ্ছ স্মৃতির ...

    প্রথম দেখার দিন আমি...
  • ইসলামি সাহিত্যের দরদ...

    ইসলামি সাহিত্যের দরদ...

    মুজাহিদে মিল্লাত মাও...
শেয়ার করুন
Amar Kotha

আমি মুজিব হাসান। আমার জন্ম কিশোরগঞ্জ জেলার হাওড় এলাকার এক কৃষক পরিবারে। দিনটি ছিল ১৩ বোশেখ—নতুন ফসল ঘরে তোলার আমেজময় সময়। বাপদাদার পেশা হাওড়ের চাষাবাদ আর গাঙের জলমহাল। আমার ইচ্ছা লেখালেখিকে নিজের পেশা হিসেবে বরণ করে নেব। এ দেশে কলমকারি করে জীবিকা নির্বাহ করা যদিও বেশ কঠিন কাজ, তবুও এ ইচ্ছা জিইয়ে রাখব।

পড়াশোনার পুরোটা কওমি মাদরাসায়। জামিয়া ইমদাদিয়া কিশোরগঞ্জ থেকে দাওরায়ে হাদিস, এরপর জামেয়া দারুল মাআরিফ চট্টগ্রামে আরবি সাহিত্য পড়েছি। করোনা মহামারির সময়টায় শুরু করেছি কর্মজীবন। প্রকাশনায় কাজের ইচ্ছা থেকে বর্তমানে সম্পাদনার কাজবাজ করছি। এছাড়া নিজের পায়ে দাঁড়ানোর মতো এখনো কোনো পাটাতন তৈরি করতে পারিনি।

হাওড়ের জীবন, প্রকৃতি ও মানুষ দেখে জেগেছে আমার লেখালেখির বোধ। জীবনের প্রথম রচনা একটি খুদেগল্প—লিখেছিলাম মক্তব সুওমে পড়ার সময়। মক্তব পাঞ্জম থেকে শুরু নিয়মিত লেখালেখি। ডায়েরি আর ছড়া-কবিতা ছিল আমার নিত্য কলমকারি। হেদায়াতুন্নাহু জামাতে পড়ার সময় গল্প-উপন্যাস রচনায় হাত দিই। এক খাতায় এক বসাতে লিখতাম আস্ত উপন্যাস!

স্কুল-মাদরাসার পাঠ্যবইগুলো আমার সাহিত্য পাঠের প্রথম জোগান। শহুরে পরিবেশে এসে বই পড়ার দিগন্ত আরও প্রসারিত হলো। মাদরাসার সাহিত্য পাঠাগার, পাবলিক লাইব্রেরি, বইয়ের দোকানে ছিল নিত্য যাতায়াত। গল্প-উপন্যাস পড়তে বেশি ভালো লাগে। কবিতা আমার অবসরের সঙ্গী। কুরআনের তাফসির ও জীবনী সাহিত্য বেশ টানে। খুব রয়েসয়ে পাঠ করি চিন্তামূলক রচনাগুলো।

পৃথিবীর বুকে আমি একটি নুক্তা কিংবা নুড়ি। বয়স ও সময়ের ঘর্ষণে ক্ষয়ে যাচ্ছি ধীরে ধীরে। চিহ্নপত্রে নিজেকে নিয়ে বলার মতো এটুকুই কথা। বাকি সব বকওয়াজ।

ফেসবুকে আমি

এটা আমার ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট।
অনুমতি ছাড়া এখান থেকে কোনো লেখা বা ছবি কপি করা অন্যায়ের অন্তর্ভুক্ত।

<
.

নিয়মিত আপডেট পেতে সাবস্ক্রাইব করুন

© ২০২৫ মুজিব হাসান